1যীশু উপাসনা-ঘর থেকে যখন বের হয়ে যাচ্ছিলেন তখন তাঁর হয়ে একজন শিষ্য তাঁকে বলল, হে গুরু, দেখুন কী সুন্দর সুন্দর পাথর ও কী সুন্দর বাড়ি !
2যীশু তাকে বললেন , তুমি কি এই সব বড় বড় বাড়ি দেখছ ? এর একটা পাথর ও আর একটা পাথরের ওপরে থাকবে না, সবই ধ্বংস হবে।
3পরে যীশু যখন উপাসনা ঘরের সামনে জৈতুন পর্ব্বতে বসেছিলেন তখন পিতর, যাকোব, যোহন ও আন্দ্রিয় তাঁকে গোপনে জিজ্ঞাসা করল ,
4আপনি আমাদের বলুন, কখন এই সব ঘটনা ঘটবে ? আর কোন চিহ্ন দেখে আমরা বুঝতে পারবো যে এই সব ঘটার সময় হয়ে এসেছে?
5যীশু তাদের বললো , দেখো কেউ যেন তোমাদের না ঠকায় ।
6অনেকে আমার নাম নিয়ে আসবে, বলবে, আমিই সেই, আর অনেক লোককে ঠকাবে।
7কিন্তু তোমরা যখন যুদ্ধের কথা ও যুদ্ধের গুজব শুনবে, তখন ভয় পেয়ো না; এ সব অবশ্যই ঘটবে, কিন্তু তখনও শেষ নয়।
8এক জাতি অন্য জাতির বিরুদ্ধে , ও এক রাজ্য অন্য রাজ্যের বিরুদ্ধে উঠবে। জায়গায় জায়গায় ভূমিকম্প ও দুর্ভিক্ষ হবে; এ সব কেবল কষ্টের শুরু ।
9তোমরা নিজেদের বিষয়ে সাবধান হও। লোকে তোমাদের বিচার-সভার লোকেদের হাতে ধরিয়ে দেবে এবং সমাজ-ঘরে তোমাদের মারা হবে; আর আমার জন্য তোমাদের দেশের শাসনকর্তা ও রাজাদের সামনে সাক্ষী দেবার জন্য দাঁড়াতে হবে।
10কিন্তু তার আগে সব জাতির কাছে সুসমাচার প্রচার করতে হবে।
11কিন্তু লোকে যখন তোমাদের ধরে বিচারের জন্য নিয়ে যাবে , তখন কি বলতে হবে তা নিয়ে ভেবো না ; সেই সময় যে কথা তোমাদের বলে দেওয়া হবে, তোমরা তাই বলবে ; কারণ তোমরাই যে কথা বলবে তা নয়, কিন্তু পবিত্র আত্মাই কথা বলবেন ।
12তখন ভাই ভাইকে ও বাবা ছেলেকে মেরে ফেলবার জন্য ধরিয়ে দেবে ; এবং ছেলেমেয়েরা নিজের নিজের বাবামায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে তাদের খুন করবে।
13আর আমার জন্য সবাই তোমাদের ঘৃনা করবে ; কিন্তু যে শেষ পর্য্যন্ত আমার নামে দাঁড়িয়ে থাকবে, সে রক্ষা পাবে ।
14যখন তোমরা দেখবে , সব শেষ করার সেই ঘৃণার জিনিস যেখানে থাকবার নয়, সেখানে রয়েছে - যে পড়ে , সে বুঝুক, -তখন যারা যিহূদিয়াতে থাকবে তারা পাহাড়ি জায়গায় পালিয়ে যাক;
15যে ছাদের ওপরে থাকবে, সে ঘর থেকে কিছু নেবার জন্য নীচে যেন না নামে;
16এবং যে জমিতে থাকে, সে নিজের কাপড় নেবার জন্য পিছনে ফিরে যেন না যায় ।
17সেই সময়ে যারা গর্ব্ভবতী এবং যারা সন্তানকে বুকের দুধ পান করায় সেই মহিলাদের অবস্থা কী খারাপই না হবে !
18প্রার্থনা কর, যেন এসব শীতকালে না ঘটে।
19কারণ সেই সময় এমন কষ্ট হবে যা জগতের শুরু থেকে এই পর্য্যন্ত হয় নি, আর কখন হবে না।
20আর প্রভু যদি সেই দিনগুলির সংখা কমিয়ে না দিতেন, তবে কোন প্রাণীই বাঁচত না; কিন্তু ঈশ্বর যাদেরকে বেছে নিয়েছেন সেই লোকদের জন্য ঈশ্বর দিনগুলি কমিয়ে দিয়েছেন ।
21আর সেই সময় যদি কেউ তোমাদেরকে বলে, দেখ, সেই খ্রীষ্ট এখানে, কিম্বা দেখ, ওখানে, তোমরা বিশ্বাস কোর না।
22কারণ নকল খ্রীষ্টেরা ও নকল নবীরা আসবে , এবং অনেক অদ্ভুত কাজ করবে , যেন তারা ঈশ্বরের বাছাই করা লোকদেরকে ও ঠকাতে পারে।
23তোমরা কিন্তু সাবধান থেকো । আমি তোমাদেরকে আগে থেকেই সব কিছু বলে রাখলাম ।
24সেই সময়ের কষ্টের ঠিক পরেই , সূর্য্য অন্ধকার হয়ে যাবে , চাঁদ আলো দেবে না,
25তারাগুলো আকাশ থেকে খশে পড়ে যাবে এবং চাঁদ, সূর্য্য, তারা আর আকাশের সব শক্তি নড়ে যাবে।
26সেই সময় লোকেরা মানবপুত্রকে মহাশক্তি ও মহামহিমার সঙ্গে মেঘের ভেতর দিয়ে আসতে দেখবে ।
27তখন তিনি তাঁর দূতদের পাঠিয়ে পৃথিবীর এক সীমা থেকে অন্য সীমা পর্য্যন্ত চারিদিক থেকে ঈশ্বরের সব বাছাই করা লোকদের জড়ো করবেন ।
28ডুমুরগাছ দেখে শিক্ষা নাও; যখন তার ডালপালা নরম হয়ে তাতে পাতা বের হয়, তখন তোমরা জানতে পার যে গরমকাল এসেছে ;
29সেইভাবে যখন তোমরা দেখবে এই সব ঘটছে তখন বুঝতে হবে যে , তাঁর আসার সময় এগিয়ে এসেছে, এমন কি, দরজায় হাজির ।
30আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, যতক্ষণ না এই সব কিছু ঘটবে ততক্ষণ পর্যন্ত্য কিছু লোক বেঁচে থাকবে।
31আকাশ ও পৃথিবী শেষ হয়ে যাবে কিন্তু আমার বাক্য চিরকাল থাকবে ।
32কিন্তু সেই দিন বা সেই সময়ের কথা কেউ জানে না; স্বর্গের দুতেরা ও না , ছেলে ও না, শুধু বাবাই জানেন।
33সাবধান হও, জেগে থাক ও প্রার্থনা করো ; কারণ সেই সময় কখন আসবে তা তোমরা জান না।
34একজন লোক যেন নিজের বাড়ি ছেড়ে বিদেশে গিয়ে বাস করছেন ; আর তিনি নিজের চাকরদের কাজ বুঝিয়ে দিলেন এবং দারোয়ানকে জেগে থাকতে বললেন, এই ভাবে সেই দিন আসবে।
35অতএব তোমরা ও এই ভাবে জেগে থাকো, কারণ বাড়ির কর্তা সন্ধ্যায়, কি দুপুররাতে, কি মোরগ ডাকার সময় , কি সকালবেলায় আসবেন তোমরা তা জান না;
36তিনি হঠাৎ এসে যেন না দেখেন তোমরা ঘুমিয়ে আছ।
37আর আমি তোমাদের যা বলি, সবাইকেই তা বলি ,জেগে থাকো ।