Bible 2 India Mobile
[VER] : [BENGALI]     [PL]  [PB] 
 <<  Mark 14 >> 

1উদ্ধারপর্ব ও তাড়ীশুন্য রুটির পর্বের মাত্র দুইদিন বাকী; এমন সময় প্রধান যাজকরা ও ব্যবস্থা শিক্ষকেরা গোপনে যীশুকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছিলেন।

2কারণ তারা বলল, পর্বের সময়ে নয়, কেননা লোকদের ভেতরে গোলমাল হতে পারে ।

3যীশু তখন বৈথনিয়াতে কুষ্ঠরোগী শিমোনের বাড়িতে ছিলেন, তিনি যখন খাচ্ছিলেন তখন একজন মহিলা সাদা পাথরের বাটিতে করে খুব দামী ও খাঁটি আতর আনল ; বাটিটি ভেঙে সে তাঁর মাথায় ঢেলে দিল ।

4সেখানে যারা হাজির ছিল তাদের ভেতরে কয়েকজন বিরক্ত হয়ে একে অপরকে বলতে লাগলো এই ভাবে আতরটা নষ্ট করা হল কেন?

5এই আতরটা বিক্রি করলে তিনশো সিকিরও বেশী পাওয়া যেত এবং তা গরীবদের দেওয়া যেত । আর এই বলে তারা সেই মহিলাটিকে বকাবকি করতে লাগলো ।

6তখন যীশু বললেন 'থাম ,কেন একে দুঃখ দিচ্ছ' ? এতো আমার জন্য ভালোকাজ করেছে ।

7গরীবেরা সব সময় তোমাদের সাথে আছে; যখন ইচ্ছা তখনই তাদের উপকার করতে পার; কিন্তু আমাকে তোমরা সব সময় পাবে না ।

8এ যা পেরেছে তাই করেছে, আমাকে কবরের জন্য প্রস্তূত করতে আগেই আমার দেহের উপর আতর ঢেলে দিয়েছে ।

9আমি তোমাদের সত্যি বলছি জগতের যে কোন জায়গায় সুসমাচার প্রচার করা হবে , সেখানে এই মহিলার কথা মনে করিয়ে দেবার জন্য ওর এই কাজের কথাও বলা হবে ।

10এর পরে ইস্করোতীয় যিহূদা নামে , সেই বারো জন শিষ্যের ভেতরে এক জন যীশুকে ধরিয়ে দেবার জন্য , প্রধান যাজকদের কাছে গেল l

11তাঁরা যিহুদার কথা শুনে খুশী হলেন এবং তাকে টাকা দেবেন বলে কথা দিলেন ;তখন সে যীশুকে ধরিয়ে দেবার জন্য সুযোগে খুঁজতে লাগলো ।

12তাড়ীশুন্য রুটীর পর্বের প্রথম দিনে, নিস্তারপর্ব্বের ভেড়ার বাচ্চা বলি দেওয়া হতো, সেই দিন তাঁর শিষ্যরা তাঁকে বললেন, আমরা কোথায় গিয়ে আপনার জন্য নিস্তারপর্ব্বের ভোজ তৈরী করব বলুন ?

13তখন যীশু তাঁর দুই জন শিষ্যকে এই বলে পাঠিয়ে দিলেন, তোমরা নগরে যাও, সেখানে এমন একজন লোকের দেখা পাবে, যে একটা কলসিতে করে জল নিয়ে যাচ্ছে ;তোমরা তার পেছনে পেছনে যেও;

14সে যে বাড়িতে ঢুকবে, সেই বাড়ির মালিককে বোলো, গুরু বলেছেন, যেখানে আমি আমার শিষ্যদের সঙ্গে নিস্তারপর্ব্বের ভোজ খেতে পারি, আমার সেই অতিথিশালা কোথায় ?

15তাতে সে লোকটি তোমাদেরকে ওপরের একটী সাজানো বড় ঘর দেখিয়ে দেবে, সেই জায়গায় আমাদের জন্য তৈরী করো।

16পরে শিষ্যরা শহরে ফিরে গেলেন, আর তিনি যেরকম বলেছিলেন , সেরকম দেখতে পেলেন; পরে তাঁরা নিস্তারপর্ব্বের ভোজ তৈরী করলেন ।

17পরে সন্ধ্যা হলে যীশু সেই বারো জন শিষ্যকে নিয়ে সেখানে এলেন।

18তাঁরা বসে ভোজন করছেন, সেই সময়ে যীশু বললেন, আমি তোমাদেরকে ঠিকই বলছি, তোমাদের মধ্য একজন যে আমাকে ধরিয়ে দেবে, সে আমার সঙ্গে ভোজন করছে ।

19তখন শিষ্যরা দুঃখ পেলো এবং একে একে যীশুকে জিজ্ঞাসা করতে লাগলো, আমি কি সেই লোক ?

20যীশু তাদেরকে বললেন, এই বারো জনের ভেতরে এক জন, যে আমার সঙ্গে এখন ভোজন করছে।

21কারণ মানবপুত্রের বিষয়ে সেরকম লেখা আছে, সে রকম ভাবেই তিনি মারা যাবেন কিন্তু ধিক সেই লোকটিকে, যে যীশুকে ধরিয়ে দেবে । সেই লোকটি যদি না জন্মাত তবে লোকটির পক্ষে ভালো হতো ।

22যখন খাওয়া দাওয়া চলছিল , সেই সময়ে যীশু রুটি হাতে নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে রুটি ভাঙলেন এবং শিষ্যদের কে দিলেন এবং বললেন তোমরা নাও , এটাই আমার শরীর।

23খাওয়ার পরে যীশু পানপাত্র নিয়ে ইশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে শিষ্যদের দিলেন এবং তারা সকলেই তা থেকে পান করলো।

24যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন , এটাই আমার রক্ত, যা অনেকের জন্য ঢেলে দেওয়া হলো, এই দিয়ে মানুষের সঙ্গে ইশ্বরের নতুন নিয়ম প্রতিষ্ঠিত হল ।

25আমি তোমাদের সত্য কথা বলছি, যে দিন আমি ঈশ্বরের রাজ্যে এটা নতুন ভাবে পান করব , সেই দিন থেকে আমি আঙুর ফলের রস আর কখনও পান করব না।

26এর পরে তাঁরা ঈশ্বরের স্তবগান করে জৈতুন পর্ব্বতে চলে গেলেন।

27যীশু তাদেরকে বললেন, তোমরা সকলে আমাকে ছেড়ে পালাবে; শাস্ত্রে এরকম লেখা আছে, “আমি মেষ পালককে আঘাত করবো, তাতে মেষেরা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়বে।”

28কিন্তু জীবিত হওয়ার পর আমি তোমাদের আগে গালীলে যাব।

29পিতর তাঁকে বলল, সবাই যদি আপনাকে ফেলে পালায়, আমি কখনো ফেলে যাব না।

30যীশু তাকে বললেন, আমি তোমাকে ঠিক কথা বলছি, আজ রাতে দুইবার মোরগ ডাকার আগে, তুমি আমাকে তিন বার চিনতে পারবে না।

31পিতর খুব বেশী উত্সাহের সঙ্গে বলতে লাগলেন, যদি আপনার সঙ্গে মরতেও হয়, কোন ভাবে আপনাকে আমি চিনি না বলবো না। অপর শিষ্যরা ও সেই রকম বললো।

32পরে তাঁরা গেৎশিমানী নামে এক জায়গায় এলেন; আর যীশু নিজের শিষ্যদের বললেন, আমি যতক্ষণ না প্রার্থনা করে আসি, তোমরা এখানে বসে থাক।

33পরে তিনি পিতর, যাকোব ও যোহনকে সঙ্গে নিয়ে গেলেন এবং খুব দুঃখী হলেন ও ভয় পেতে লাগলেন ।

34তিনি তাদেরকে বললেন ,মৃত্যুর ভয়ে আমার প্রাণ দুঃখ ও ব্যথায় ভরে গেছে ; তোমরা এখানে জেগে থেকে প্রার্থনা করো ।

35কিছু দুরে এগিয়ে গিয়ে যীশু মাটিতে পড়ে এই প্রার্থনা করলেন , যদি সম্ভব হয় তবে যেন সেই সময় তাঁর কাছ থেকে চলে যায়।

36যীশু বললেন , আব্বা, পিতা তোমার কাছে তো সবই সম্ভব ; এই দুঃখের পেয়ালা তুমি আমার কাছ থেকে সরিয়ে নাও ; তবুও আমার ইচ্ছামত না হয় ,কিন্তু তোমার ইচ্ছামত হয় ।

37যীশু ফিরে এসে দেখলেন ,শিষ্যরা ঘুমিয়ে পড়েছে , তিনি পিতরকে বললেন , শিমোন তুমি কি ঘুমিয়ে পড়েছ ? এক ঘন্টাও কি তুমি জেগে থাকতে পারলে না?

38তোমরা জেগে থাক ও প্রার্থনা কর, যেন পরীক্ষায় না পড়; তোমাদের মনে ইচ্ছা আছে , কিন্তু শরীরে বল নেই ।

39আর তিনি আবার গিয়ে সেই কথা বলে প্রার্থনা করলেন ।

40পরে তিনি আবার এসে দেখলেন , তারা ঘুমিয়ে পড়েছে কারণ তাদের চোখ ঘুমে ভারী হয়ে ছিল, তারা যীশুকে কি উত্তর দেবে , তা তারা বুঝতে পারল না।

41পরে তিনি তৃতীয় বার এসে তাদেরকে বললেন , এখন তোমরা ঘুমাও , বিশ্রাম কর; যথেষ্ট হয়েছে ; সময় এসেছে , দেখ, মনুষ্যপুত্রকে পাপীদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ।

42উঠ, আমরা যাই; এই দেখ, যে লোক আমাকে ধরিয়ে দেবে , সে কাছে এসেছে । যীশুকে শত্রুদের হাতে ধরিয়ে দেয় ।

43আর তিনি যখন কথা বলছিলেন, সেই সময় যিহূদা, সেই বারো জনের এক জন এল এবং তার সঙ্গে অনেক লোক তরওয়াল ও লাঠি নিয়ে প্রধান যাজকদের, ব্যবস্থা শিক্ষকদের ও প্রাচীনদের কাছ থেকে এল ।

44যে যীশুকে ধরিয়ে দিচ্ছিল , সে আগে থেকে তাদের এই চিহ্ন এর কথা বলেছিল , আমি যাকে চুম্বন করবো , সেই ঐ লোক , তোমরা তাকে ধরে সাবধানে নিয়ে যাবে।

45সে তখনি তাঁর কাছে গিয়ে বললো , গুরু ; এই বলে তাঁকে উত্সাহের সঙ্গে চুম্বন করলো ।

46তখন তারা যীশুকে বেঁধে ধরে ফেললো ।

47কিন্তু যারা পাশে দাঁড়িয়েছিল , তাদের ভেতরে এক জন নিজের খাঁড়া খুলে মহাযাজকের সেবককে আঘাত করলো, তার একটি কান কেটে ফেললো।

48তখন যীশু তাদেরকে বললেন , যেমন ডাকাতকে ধরা হয়, তেমন কি তোমরা খাঁড়া ও লাঠি নিয়ে আমাকে ধরতে এলে ?

49আমি প্রতিদিন মন্দিরে তোমাদের কাছে থেকে শিক্ষা দিয়েছি , তখন ত আমায় ধরলে না; কিন্তু শাস্ত্রের কথা গুলি সফল হওয়ার জন্য এরকম ঘটালে

50তখন শিষ্যরা তাঁকে ছেড়ে পালিয়ে গেল ।

51আর, এক জন যুবক উলঙ্গ চেহারায় কেবল একখানি চাদর পরে যীশুর পেছন পেছন যেতে লাগলো ;

52তারা যুবকটিকে ধরলে , সে সেই চাদরটি ফেলে উলঙ্গ হয়ে পালাল ।

53পরে তারা যীশুকে মহাযাজকের কাছে নিয়ে গেল; তাঁর সঙ্গে প্রধান যাজকরা , প্রধাণরা ও শিক্ষাগুরুরা জড়ো হল।

54আর পিতর দূরে দূরে থেকে তাঁর পেছন পেছন ভিতরে, মহাজাজকের উঠোন পর্য্যন্ত গেলেন, এবং পাহারাদারদের সঙ্গে বসে আগুন পোহাতে লাগলো ।

55তখন প্রধান যাজকরা ও সব মহাসভা যীশুকে মেরে ফেলার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে দোষ খুঁজছিলেন, কিন্তু পেলেন না।

56কেননা অনেকে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যাসাক্ষ্য দিল কিন্তু তাদের সাক্ষ্য মিললো না ।

57পরে একজন দাঁড়িয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যাসাক্ষ্য দিয়ে বললো ,

58আমরা ওনাকে এই কথা বলতে শুনেছি , আমি এই হাতে তৈরী উপাসনার ঘর ভেঙে ফেলবো , আর তিন দিনের ভেতরে হাতে তৈরী নয় আর এক উপাসনার ঘর তৈরী করবো ।

59এতে ও তাদের সাক্ষ্য মিললো না।

60তখন মহাযাজক মাঝখানে দাঁড়িয়ে যীশুকে জিজ্ঞাসা করলেন , তুমি কি কোনো উত্তর দেবে না? তোমার বিরুদ্ধে এরা কি সাক্ষ্য দিচ্ছে ?

61কিন্তু তিনি চুপচাপ থাকলেন , কোন উত্তর দিলেন না। আবার মহাযাজক তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন , তুমি কি সেই খ্রীষ্ট, ঈশ্বরের পুত্র?

62যীশু বললেন , আমি সেই; আর তোমরা মনুষ্যপুত্রকে ঈশ্বরের ডান পাশে বসে থাকতে ও আকাশে মেঘের ভেতর দিয়ে আসতে দেখবে ।

63তখন মহাযাজক নিজের কাপড় ছিঁড়ে বললেন , আর সাক্ষীতে আমাদের কি দরকার ?

64তোমরা ত ঈশ্বর-নিন্দা শুনলে তোমাদের মতামত কি ? তারা সবাই তাঁকে দোষী করে বলল , একে মেরে ফেলা উচিত ।

65তখন কেউ কেউ তাঁর গায়ে থুথু দিতে লাগলো এবং তাঁর মুখ ঢেকে তাঁকে ঘুষি মারতে লাগলো , আর বলতে লাগলো , ঈশ্বরের বাক্য বল না? পরে পাহারাদাররা মারতে মারতে তাঁকে নিয়ে গেলো ।

66পিতর যখন নীচে উঠোনে ছিলেন, তখন মহাযাজকের এক সেবিকা এল ;

67সে পিতরকে আগুন পোহাতে দেখে তাঁর দিকে তাকিয়ে বললো , তুমিও ত সেই নাসরতীয়ের, সেই যীশুর, সঙ্গে ছিলে।

68কিন্তু পিতর স্বীকার না করে বললো, তুমি যা বলছ , আমি তা জানিও না, বুঝিও না। পরে তিনি বেরিয়ে দরজার কাছে গেলেন, আর মোরগ ডেকে উঠলো ।

69কিন্তু দাসী তাঁকে দেখে , যারা কাছে দাঁড়িয়ে ছিল , তাদেরকে বলতে লাগলো এই লোক তাদেরই এক জন।

70তিনি আবার অস্বীকার করলেন। কিছুক্ষণ পরে যারা কাছে দাঁড়িয়েছিল , আবার তারা পিতরকে বললো , ঠিকই বলছি তুমি তাদের এক জন, কারণ তুমি গালীলিয় লোক।

71পিতর নিজেকে অভিশাপের সঙ্গে এই শপথ নিয়ে বলতে লাগলেন, তোমরা যে লোকের কথা বলছো, তাকে আমি চিনি না।

72তখনি দ্বিতীয় বার মোরগ ডেকে উঠলো ; তাতে যীশু এই যে কথা বলেছিলেন , ‘মোরগ দুই বার ডাকবার আগে তুমি তিন বার আমাকে অস্বীকার করবে ,’ সেই কথা পিতরের মনে পড়ল এবং তিনি সেই বিষয়ে মনে কোরে কাঁদতে লাগলেন


  Share Facebook  |  Share Twitter

 <<  Mark 14 >> 


Bible2india.com
© 2010-2024
Help
Dual Panel

Laporan Masalah/Saran