Bible 2 India Mobile
[VER] : [BENGALI]     [PL]  [PB] 
 <<  Mark 6 >> 

1পরে যীশু সেখান থেকে চলে গেলেন এবং নিজের দেশে আসলেন, আর তাঁর শিষ্যরা তাঁর পেছন পেছন গেল।

2বিশ্রামবার এলে তিনি সমাজ-ঘরে শিক্ষা দিতে লাগলেন; তাতে অনেক লোক তার কথা শুনে অবাক হয়ে বললো, এই লোক এ সব শিক্ষা কোথা থেকে পেয়েছে? এ কি জ্ঞান তাকে ঈশ্বর দিয়েছে? এই লোকটির হাত দিয়ে যে সব অলৌকিক কাজ হচ্ছে, এটাই বা কি?

3এ কি সেই ছুতার মিস্ত্রি, মরিয়মের সেই পুত্র এবং যাকোব, যোষি, যিহূদা ও শিমোনের ভাই নয়? এবং এর বোন কি এখানে আমাদের মধ্যে নেই? এইভাবে তারা যীশুকে নিয়ে বাধা পেতে লাগল।

4তখন যীশু তাদের বললেন, নিজের দেশ ও নিজের লোক এবং নিজের বাড়ি ছাড়া আর কোথাও ভাববাদী অসম্মানিত হন না।

5তখন তিনি সে জায়গায় আর কোন আশ্চর্য্য কাজ করতে পারলেন না, শুধুমাত্র কয়েক জন রোগগ্রস্থ মানুষের ওপরে হাত রেখে তাদেরকে সুস্থ করলেন।

6আর তিনি তাদের অবিশ্বাস দেখে অবাক হলেন। পরে তিনি চারদিকে গ্রামে গ্রামে ঘুরে শিক্ষা দিতে লাগলেন।

7আর তিনি সেই বারো জনকে কাছে ডেকে দুজন-দুজন করে তাঁদেরকে প্রচার করবার জন্য পাঠিয়ে দিতে শুরু করলেন; এবং তাঁদেরকে মন্দ আত্মার ওপরে ক্ষমতা দান করলেন;

8আর আদেশ করলেন, তারা যেন চলার জন্য এক এক লাঠি ছাড়া আর কিছু না নেয়, রুটীও না, ঝুলিও না, কোমরবন্ধনীতে পয়সাও না;

9কিন্তু পায়ে জুতো পরো, আর দুইটি জামাও পরিও না।

10তিনি তাঁদেরকে আরও বললেন, তোমরা যখন কোন বাড়ীতে ঢুকবে, সেখান থেকে অন্য কোথাও যাওয়া পর্য্যন্ত সেই বাড়ীতে থেকো।

11আর যদি কোন জায়গার লোক তোমাদেরকে গ্রহণ না করে এবং তোমাদের কথা না শোনে, সেখান থেকে যাওয়ার সময় তাদের উদ্দেশ্যে সাক্ষ্যের জন্য নিজ নিজ পায়ের থেকে ধুলো ঝেড়ে ফেলো।

12পরে তাঁরা গিয়ে প্রচার করলেন, যেন মানুষেরা পাপ থেকে মন ফেরায়।

13আর তাঁরা অনেক মন্দ আত্মা ছাড়ালেন এবং অনেক অসুস্থ লোককে তেল মাখিয়ে তাদেরকে সুস্থ করলেন।

14আর হেরোদ রাজা তাঁর কথা শুনতে পেলেন, কারণ যীশু খুব সুনাম ছিল। তখন তিনি বললেন, যোহন বাপ্তাইজক মৃতদের মধ্য থেকে উঠেছেন, আর সেই জন্য এই সব আশ্চর্য্য কাজ করছেন।

15কিন্তুু কেউ কেউ বলল, উনি এলিয় এবং কেউ কেউ বলল, উনি একজন ভবিষ্যত বক্তা, ভবিষ্যৎ বক্তাদের মধ্যে কোন একজনের মত।

16কিন্তু হেরোদ তাঁর কথা শুনে বললেন, আমি যে যোহনের মাথা শিরচ্ছেদ করেছি, তিনি উঠেছেন।

17হেরোদ নিজ ভাই ফিলিপের স্ত্রী হেরোদিয়ার জন্য নিজের লোক পাঠিয়ে যোহনকে ধরে জেলে বন্ধ করেছিলেন, কারণ তিনি তাকে বিয়ে করেছিলেন।

18যোহন হেরোদকে বলেছিলেন, ভাইয়ের স্ত্রীকে বিয়ে করা আপনার ঠিক হয়নি।

19আর হেরোদিয়া তাঁর ওপর রেগে গিয়ে তাঁকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল, কিন্তু পেরে ওঠেনি।

20কারণ হেরোদ যোহনকে ধার্ম্মিক ও পবিত্র লোক বলে ভয় করতেন ও তাঁকে রক্ষা করতেন। আর তাঁর কথা শুনে তিনি খুব অস্বস্তি বোধ করতেন এবং তাঁর কথা শুনতে ভাল বাসতেন।

21পরে হেরোদিয়ার কাছে এক সুযোগ এল, যখন হেরোদ নিজের জন্মদিনে বড় বড় লোকদের, সেনাপতিদের এবং গালীলের প্রধান লোকদের জন্য এক রাত্রিভোজ আয়োজন করলেন;

22আর হেরোদিয়ার মেয়ে সেই ভোজ সভায় নেচে হেরোদ এবং যাঁরা তাঁর সঙ্গে ভোজে বসেছিলেন, তাঁদের সন্তুুষ্ট করলো। তাতে রাজা সেই মেয়েকে বললেন, তোমার যা ইচ্ছা হয়, আমার কাছে চাও, আমি তোমাকে দেব।

23আর তিনি শপথ করে তাকে বললেন, অর্ধেক রাজ্য পর্য্যন্ত হোক, আমার কাছে যা চাইবে, তাই তোমাকে দেব।

24সে তখন বাইরে গিযে নিজের মাকে জিজ্ঞাসা করল, আমি কি চাইব? সে বলল, যোহন বাপ্তাইজকের মাথা।

25সে তখনই তাড়াতাড়ি করে হলের মধ্যে গিয়ে রাজার কাছে তা চাইল, বলল, আমার ইচ্ছা এই যে, আপনি এখনই যোহন বাপ্তাইজকের মাথা থালায় করে আমাকে দিন।

26তখন রাজা খুব দুঃখিত হলেও নিজ শপথ এর কারণে এবং যারা ভোজে বসেছিল, তাদের জন্যে, তাকে ফিরিয়ে দিলেন না।

27আর রাজা তখনই এক জন সেনাকে পাঠিয়ে যোহনের মাথা আনতে আদেশ দিলেন; সেই সেনাটি জেলের মধ্যে গিয়ে তাঁর মাথা ছেদন করল,

28পরে তাঁর মাথা থালায় করে নিয়ে এসে সেই মেয়েকে দিল এবং মেয়েটি নিজের মাকে দিল।

29এই খবর পেয়ে তাঁর শিষ্যরা এসে তাঁর দেহ নিয়ে গিয়ে কবর দিল।

30পরে প্রেরিতেরা যীশুর কাছে এসে জড়ো হলেন; আর তাঁরা যা কিছু করেছিলেন, ও যা কিছু শিক্ষা দিয়েছিলেন, সেই সব তাঁকে বললেন।

31তিনি তাঁদেরকে বললেন, তোমরা দূরে এক নির্জ্জন জায়গায় এসে কিছু দিন বিশ্রাম কর। কারণ অনেক লোক আসা যাওয়া করছিল, তাই তাঁদের খাবারও সময় ছিল না।

32পরে তাঁরা নিজেরা নৌকা করে দূরে এক নির্জ্জন জায়গায় চলে গেলেন।

33কিন্তু লোকে তাঁদেরকে যেতে দেখল এবং অনেকে তাঁদেরকে চিনতে পারল, তাই সব শহর থেকে মানুষেরা দৌড়ে গিয়ে তাঁদের আগে সেখানে গেল।

34তখন যীশু নৌকো থেকে বের হয়ে বহু লোক দেখে তাদের জন্য দয়াবান হলেন, কারণ তারা পালক-হীন মেষপালের মত ছিল; আর তিনি তাদেরকে অনেক বিষয় শিক্ষা দিতে লাগলেন।

35পরে দিন প্রায় শেষ হলে তাঁর শিষ্যরা কাছে এসে তাঁকে বললেন, এই নির্জ্জন স্থান এবং দিনও প্রায় শেষ;

36তাই এদেরকে যেতে দিন, যেন এরা চারদিকে শহরে শহরে এবং গ্রামে গ্রামে গিয়ে নিজেদের জন্য খাবার জিনিস কিনতে পারে।

37কিন্তু তিনি উত্তর করে তাঁদেরকে বললেন, তোমরাই এদেরকে কিছু খেতে দেও। তাঁরা বললেন, আমরা গিয়ে কি দুই শত সিকির রুটী কিনে নিয়ে ওদেরকে খেতে দেব ?

38তিনি তাঁদেরকে বললেন, তোমাদের কাছে কয়টি রুটী আছে? গিয়ে দেখ। তাঁরা দেখে বললেন, পাঁচটি রুটী এবং দুটী মাছ আছে।

39তখন তিনি সবাইকে সবুজ ঘাসের ওপরে দলে দলে বসিয়ে দিতে আদেশ দিলেন।

40তারা কোনো সারিতে একশত জন ও কোনো সারিতে পঞ্চাশ জন করে বসে গেল।

41পরে তিনি সেই পাঁচটি রুটী ও দুটী মাছ নিয়ে স্বর্গের দিকে তাকিয়ে ধন্যবাদ দিলেন এবং সেই রুটী কয়টি ভেঙ্গে লোকদের দেবার জন্য শিষ্যদের হাতে দিলেন; আর সেই দুটী মাছও সবাইকে ভাগ করে দিলেন।

42তাতে সবাই যতক্ষণ না সন্তুষ্ট হল তারা খেলো।

43পরে তাঁরা গুঁড়াগাঁড়ায় ভরা বারো ডালা রুটি এবং কিছু মাছও তুলে নিলেন ।

44যারা সেই রুটী খেয়েছিল সেখানে পাঁচ হাজার পুরুষ ছিল ।

45পরে তিনি তখনই শিষ্যদেরকে শক্তভাবে বলে দিলেন, যেন তাঁরা নৌকায় উঠে তাঁর আগে অপর পাড়ে বৈৎসৈদার দিকে যান, আর সেইসময় তিনি লোকদেরকে বিদায় দেন।

46যখন সবাই চলে গেল তখন তিনি প্রার্থনা করবার জন্য পাহাড়ে চলে গেলেন।

47যখন সন্ধ্যা হল, তখন নৌকাটি সমুদ্রের মাঝখানে ছিল এবং তিনি একা ডাঙায় ছিলেন।

48পরে যীশু দেখতে পেলেন শিষ্যরা নৌকায় যেতে খুব কষ্ট করছিল কারণ হাওয়া তাদের সামনের দিক থেকে আসছিল। প্রায় চার প্রহর রাত্রে সমুদ্রের উপর দিয়ে যীশু হেঁটে তাঁদের কাছে আসলেন এবং তাঁদেরকে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছিলেন।

49কিন্তু সমুদ্রের উপর দিয়ে তাঁকে হাঁটতে দেখে তাঁরা ভূত মনে করে চেঁচিয়ে উঠলেন,

50কারণ সবাই তাঁকে দেখেছিলেন ও ভয় পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সঙ্গে কথা বললেন, তাঁদেরকে বললেন, সাহস কর, এখানে আমি, ভয় করো না।

51পরে তিনি তাঁদের সঙ্গে নৌকোয় উঠলেন, আর বাতাস থেমে গেল; তাতে তাঁরা মনে মনে এই সব দেখে অবাক হয়ে গেল।

52কারণ তাঁরা রুটির বিষয় বুঝতে পারেননি, কিন্তু তাঁদের মন খুবই কঠিন ছিল এই সব বোঝার জন্য।

53পরে তাঁরা পার হয়ে গিনেষরৎ প্রদেশে এসে নৌকো লাগালেন।

54যখন সবাই নৌকো থেকে বের হলো লোকেরা তখনি যীশুকে চিনতে পেরেছিল l

55তাঁকে চেনার পর সমস্ত অঞ্চলের চারদিক থেকে দৌড়ে আসতে লাগল এবং অসুস্থ লোকদের খাটে করে তিনি যে জায়গায় আছেন শুনতে পেয়ে মানুষেরা সেই জায়গায় আনতে লাগল।

56আর গ্রামে, কি শহরে, কি দেশে, যে কোনো জায়গায় তিনি গেলেন, সেই জায়গায় তারা অসুস্থদেরকে বাজারে বসাল; এবং তাঁকে মিনতি করল, যেন ওরা তাঁর পোশাকের একটি অংশ যেন ছুঁতে পারে, আর যত লোক তাঁকে ছুঁলো, সবাই সুস্থ হল।


  Share Facebook  |  Share Twitter

 <<  Mark 6 >> 


Bible2india.com
© 2010-2024
Help
Dual Panel

Laporan Masalah/Saran