1পরে তিনি নীতি গল্প দিয়ে তাদের কাছে কথা বলতে লাগলেন । একজন লোক আঙুর খেত চাষ করে তার চারপাশে বেড়া দিলেন, আঙুর পেশার জন্য গর্ত খুঁড়লেন, এবং একটি উঁচুবাড়ি তৈরী করলেন ; আর চাষিদের হাতে তা জমা দিয়ে বিদেশে চলে গেলেন।
2পরে চাষিদের কাছে আঙুর খেতের ফলের ভাগ নেবার জন্য, ফল পাকার সঠিক সময়ে এক চাকরকে তাদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন;
3চাষিরা তার সেবককে মার ধোর করে খালি হাতে পাঠিয়ে দিল।
4আবার মালিক তাদের কাছে আর এক সেবককে পাঠালেন; তারা তার মাথা ফাটিয়ে দিল ও অপমান করলো ।
5পরে তিনি তৃতীয় জনকে পাঠালেন; তারা সেই সেবককে ও মেরে ফেললো; এইভাবে মালিক অনেককে পাঠালেন ,চাষিরা কাউকে মার ধোর করল, কাউকে বা মেরে ফেললো ।
6মালিকের কাছে তাঁর একমাত্র ছেলে ছাড়া এরপর পাঠানোর মতো আর কেউ ছিল না শেষে তিনি তাঁর আদরের ছেলেকে চাষিদের কাছে পাঠালেন , আর তারা ভাবলেন আমার ছেলেকে অন্তত সম্মান করবে ।
7কিন্তু চাষিরা নিজেদের ভেতরে আলোচনা করে বলল,বাবার পরে এই ত মালিক হবে, এস আমরা ছেলেটিকে মেরে ফেলি, ছেলেটিকে মেরে ফেললে আঙুর খেতটি আমাদেরই হবে।
8পরে তারা ছেলেটিকে ধরে মেরে ফেললো এবং আঙ্গুর খেতের বাইরে ফেলে দিলো ।
9এরপর সেই আঙুর খেতের মালিক কী করবেন ? তিনি এসে সেই চাষিদের মেরে ফেলবেন এবং খেত অন্য চাষিদের কাছে দেবেন ।
10তোমরা কি পবিত্র বাক্যে এই কথাও পড় নি, “যে পাথরটাকে মিস্ত্রীরা বাদ দিয়েছিলো, সেই পাথরটাই কোণের প্রধান পাথর হোয়ে উঠলো ;
11প্রভু ঈশ্বরই এই কাজ করেছেন , আর এটা আমাদের চোখে সত্যিই খুব আশ্চর্য্য কাজ”?
12এই উপমাটি বলার জন্য তারা যীশুকে ধরতে চেয়েছিল , -কিন্তু তারা জনগণকে ভয় পেলো , -কারণ তারা বুঝেছিল যে, যীশু তাদেরই বিষয়ে এই নীতি গল্পটা বলেছেন; পরে তারা তাঁকে ছেড়ে চলে গেলো ।
13তারপর তারা কয়েক জন ফারীশী ও হেরোদীয়কে যীশুর কাছে পাঠিয়ে দিল, যেন তারা তাঁর কথার ফাঁদে ফেলে তাঁকে ধরতে পারে।
14তারা এসে তাঁকে বললো, গুরু যাই হোক না কেনো আপনি সত্যি কথা বলতে কখনো ভয় পান না; কারণ লোকের মতামত আপনার উপর প্রভাব খাটাতে পারেনা, কিন্তু লোকেদের আপনি ঈশ্বরের সত্য পথের বিষয় শিক্ষা দেন;
15আচ্ছা বলুন তো কৈসরকে কর দেওয়া উচিত কি না? আমরা কর দেবো না কি দেব না ? যীশু তাদের চালাকি বুঝতে পেরে বললেন, আমার পরীক্ষা করছ কেন? আমাকে একটা টাকা এনে দাও আমি টাকাটা দেখি।
16তারা টাকাটা আনল; যীশু তাদেরকে বললেন , এই টাকাতে কার মূর্তি ও কার নাম ছাপা আছে? তারা বলল কৈসরের l
17যীশু তাদের বললেন, যা কিছু কৈসরের তা কৈসরকে দাও, আর যা কিছু ঈশ্বরের তা ঈশ্বরকে দাও । তখন তারা যীশুর কথায় খুব অবাক হোয়ে গেলো
18তারপর সদ্দুকিরা যীশুর কাছে এল এবং তাঁকে জিজ্ঞাসা করলো যারা বলত মানুষ কখনো মৃত্যু থেকে বেঁচে ওঠে না।
19তারা যীশুর কাছে এসে বলল "গুরু মোশি আমাদেরকে লিখেছেন, কারোর ভাই যদি বউ রেখে মারা যায় , আর তার যদি ছেলেমেয়ে না থাকে, তবে তার ভাই তার বউকে বিয়ে করে নিজের ভাইয়ের বংশ রক্ষা করবে।"
20ভালকথা, কোনো একটি পরিবারে সাতটী ভাই ছিল; বড় ভাই বিয়ে করে, ছেলেমেয়ে না রেখে মরে গেল।
21পরে দ্বিতীয় ভাই সেই বউটিকে বিয়ে করল , কিন্তু সেও ছেলেমেয়ে না রেখে মরে গেলো ; তৃতীয় ভাইও সেই রকম অবস্থায় মরে গেলো ।
22এইভাবে সাত ভাই বিয়ে করে কোন ছেলেমেয়ে না রেখে মরে যায় ; সবার শেষে সেই বউটি ও মরে গেলো ।
23শেষ দিনে মৃত্যু থেকে যখন তারা সাত ভাই উঠবে , সেই বউটি কার বউ হবে ? তারা সাত ভাই ত তাকে বিয়ে করেছিল।
24তাদের কথা শুনে যীশু তাদের বললেন , তোমাদের ভুল হচ্ছে , তোমরা না জান ঈশ্বরের বাক্য, না জান ঈশ্বরের ক্ষমতা ?
25যখন সেই বউটি ও সাত ভাই মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে উঠলে তখন তাদের আর বিয়ের দরকার হবে না, তারা স্বর্গে দূতদের মতো থাকবে।
26মৃত্যু থেকে জীবিত হবার বিষয়ে বলব, এই বিষয়ে মোশির বইতে ঝোপের বিবরণ পড় নি? ঈশ্বর তাঁকে কিভাবে বলেছিলেন , “আমি অব্রাহামের ঈশ্বর, ইসহাকের ঈশ্বর ও যাকোবের ঈশ্বর।”
27যীশু মৃতদের ঈশ্বর নন, কিন্তু জীবিতদের। তোমরা ভীষণ ভুল করছ ।
28আর তাদের এক জন শাস্ত্রগুরু কাছে এসে তাদের তর্ক বিতর্ক করতে শুনলেন এবং যীশু তাদের ঠিকঠিক উত্তর দিচ্ছেন শুনে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, সব আদেশের ভেতরে কোনটী প্রথম?
29যীশু উত্তর করলেন, প্রথমটি এই, “হে ইস্রায়েল, শোন ; আমাদের ঈশ্বর প্রভু একমাত্র প্রভু ;
30আর তুমি সেই ইশ্বরকে তোমার সব মনপ্রাণ , তোমার সব অন্তর ও তোমার সব শক্তি দিয়ে তোমার ঈশ্বর প্রভুকে ভালবাসবে ।”
31দ্বিতীয়টি এই, “তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত ভালবাসবে ” এই দুইটি আদেশের থেকে বড় আর কোন আদেশ নেই ।
32ব্যবস্থাগুরু তাঁকে বললেন, ভালোগুরু , আপনি সত্যি বলছেন যে, তিনি এক, এবং তিনি ছাড়া অপর কেউ নেই ;
33আর সব মনপ্রাণ , সব বুদ্ধি ও শক্তি দিয়ে ইশ্বরকে ভালবাসা এবং প্রতিবেশীকে নিজের মত ভালবাসা সব হোম ও বলিদান থেকে ভালো ।
34তখন সে বুদ্ধিমানের মতো উত্তর দিয়েছে শুনে যীশু তাকে বললেন ,তুমি ঈশ্বরের রাজ্যের খুব কাছাকাছি আছ ।এর পরে তাঁকে কোন কথা জিজ্ঞাসা করতে আর কারোর কোনো সাহস হলো না।
35আর মন্দিরে শিক্ষা দেবার সময়ে যীশু উত্তর করে বললেন , ব্যবস্থার শিক্ষকরা কি ভাবে বলে যে, খ্রীষ্ট দায়ূদের সন্তান?
36কারণ দায়ূদ নিজে পবিত্র আত্মার প্রেরণাতেই তিনি এই কথা বলেছিলেন , “প্রভু আমার প্রভুকে বলেছিলেন যতক্ষণ না তোমার শত্রুকে তোমার পায়ের নীচে নিয়ে আসি , ততক্ষণ তুমি আমার ডানপাশে বসে থাকবে ।”
37যখন দায়ূদ নিজেই তাঁকে প্রভু বলেন, তবে তিনি কিভাবে তাঁর ছেলে হলেন? আর সাধারণ লোকে আনন্দের সাথে তাঁর কথা শুনতো ।
38আর যীশু নিজের শিক্ষার ভেতর দিয়ে তাদেরকে বললেন , ব্যবস্থাগুরুদের থেকে সাবধানে থেকো , তারা লম্বা লম্বা কাপড় পরে বেড়াতে চায়,
39এবং হাটে বাজারে লোকদের শুভেচ্ছা জানায় , সভাতে তারা সবসময় প্রধান অথিতির আসন চায় এবং ভোজে সবচেয়ে ভালো জায়গা ভালবাসে ।
40এই সব লোকেরা বিধবাদের সব বাড়ি দখল করে, আর ছলনা করে বড় বড় প্রার্থনা করে, এই সব লোকেরা বিচারে অনেক বেশী শাস্তি পাবে।
41আর তিনি দানের বাক্সের সামনে বসলেন, লোকেরা দানের বাক্সের ভেতরে কিভাবে টাকা রাখছে তা দেখছিলেন। তখন অনেক ধনীলোক তার ভেতরে অনেক কাঁচা টাকা রাখলো ।
42এর পরে একজন গরীব বিধবা এসে মাত্র দুইটি পয়সা তাতে রাখলো , যার মূল্য সিকি পয়সা।
43তখন তিনি নিজের শিষ্যদেরকে কাছে ডেকে বললেন , আমি তোমাদের সত্যি বলছি দানের বাক্সে যারা পয়সা রাখছে , তাদের সবার থেকে এই গরীব বিধবা বেশী রাখল ;
44কারণ অন্য সবাই নিজের নিজের বাড়তি টাকা পয়সা থেকে কিছু কিছু রেখেছে , কিন্তু এই বিধবা গরিব মহিলা বেঁচে থাকার জন্য যা ছিল সব কিছু দিয়ে দিলো l