1সেই সময় একদিন যখন আবার অনেক লোকের ভিড় হল এবং তাদের কাছে কোনো খাবার ছিল না, তখন তিনি নিজের শিষ্যদের কাছে ডেকে বললেন,
2এই লোকদের জন্য আমার মায়া হচ্ছে; কারণ এরা আজ তিনদিন আমার সঙ্গে সঙ্গে আছে এবং এদের কাছে খাবার কিছুই নেই।
3আর আমি যদি এদেরকে না খেতে দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দিই, তবে এরা পথে হয়তো অজ্ঞান হয়ে পড়বে; আবার এদের মধ্যে কেউ কেউ বহু দূর থেকে এসেছে।
4তাঁর শিষ্যেরা উত্তর দিয়ে বললেন, এই নির্জন জায়গায় এই সব লোকদের খাবারের জন্য কোথা থেকে এত রুটি পাবো?
5তিনি তাঁদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের কাছে কয়টা রুটি আছে? তারা বললেন সাতটি।
6পরে তিনি লোকদের জমিতে বসতে আদেশ দিলেন এবং সেই সাতখানি রুটি নিয়ে ধন্যবাদ দিয়ে ভেঙ্গে লোকদের দেবার জন্য শিষ্যদের দিতে লাগলেন; আর শিষ্যরা লোকদের দিলেন ।
7তাঁদের কাছে কয়েকটী ছোট ছোট মাছও ছিল, তিনি আশীর্ব্বাদ দিয়ে সেগুলিও লোকদের দেবার জন্য শিষ্যদের আদেশ দিলেন।
8তাতে লোকেরা পেট ভরে খেল; এবং তাঁরা অবশিষ্ট গুঁড়াগাঁড়া সাত ঝুড়ি পুরোপুরি ভর্তি করলেন তুলে নিলেন।
9লোক ছিল কমবেশ চার হাজার; পরে তিনি তাদের পাঠিয়ে দিলেন।
10আর তখনই তিনি শিষ্যদের সঙ্গে নৌকোয় উঠে দলমনুথা দেশে গেলেন।
11তার পরে ফরীশীরা বাইরে এসে তাঁর সঙ্গে তর্কাতর্কি করতে লাগল, পরীক্ষা করার জন্য তাঁর কাছে আকাশ থেকে এক চিহ্ন দেখতে চাইল।
12তখন তিনি আত্মায় গভীর নিঃশ্বাস ছেড়ে বললেন, এই সময়ের লোকেরা কেন চিহ্নের খোঁজ করে? আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এই লোকদের কোন চিহ্ন দেখান হবে না।
13পরে তিনি তাদেরকে ছেড়ে আবার নৌকোয় উঠে অন্য পারে চলে গেলেন।
14আর শিষ্যরা রুটি নিতে ভুলে গিয়েছিলেন, নৌকোয় তাঁদের কাছে কেবল একটি ছাড়া আর রুটি ছিল না।
15পরে তিনি তাদেরকে সতর্ক করে দিয়ে বললেন, তোমরা ফরীশীদের তাড়ীর বিষয়ে ও হেরোদের খামিরের বিষয়ে সাবধান থেকো।
16তাতে তাঁরা একে অপরের সঙ্গে তর্ক করে বলতে লাগলেন, আমাদের কাছে রুটি নেই বলে উনি এই কথা বলছেন।
17তা বুঝতে পেরে যীশু তাঁদেরকে বললেন, তোমাদের রুটি নেই বলে কেন তর্ক করছ? তোমরা কি এখনও কিছু জানতে পারছ না? তোমাদের মন কি কঠিন হয়ে গেছে?
18তোমাদের চোখ থাকতেও কি দেখতে পাও না? কান থাকতেও কি শুনতে পাও না? আর মনেও কি পড়ে না?
19আমি যখন পাঁচ হাজার লোকের মধ্যে পাঁচটি রুটি ভেঙ্গে দিয়েছিলাম, তখন তোমরা কত ঝুড়ি গুঁড়াগাঁড়া ভরে তুলে নিয়েছিলে? তারা বললেন, বারো ঝুড়ি।
20আর যখন চার হাজার লোকের মধ্যে সাত খানা রুটি ভেঙ্গে দিয়েছিলাম, তখন কত ঝুড়ি গুঁড়াগাঁড়ায় ভরে তুলে নিয়েছিলে?
21তিনি তাঁদের বললেন, তোমরা কি এখনও বুঝতে পারছ না?
22তাঁরা বৈৎসৈদাতে আসলেন; আর লোকেরা এক জন অন্ধকে তাঁর কাছে এনে তাঁকে কাকুতি মিনতি করল, যেন তিনি তাঁকে ছুলেন।
23তিনি সেই অন্ধ মানুষটির হাত ধরে তাকে গ্রামের বাইরে নিয়ে গেলেন; পরে তার চোখে থুথু দিয়ে ও তার উপরে হাত রেখে তাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, কিছু দেখতে পাচ্ছ?
24সে চোখ তুলে চাইল ও বলল, মানুষ দেখছি, গাছের মতন হেঁটে বেড়াচ্ছে।
25তখন তিনি তার চোখের উপর আবার হাত দিলেন, তাতে সে দেখবার শক্তি ফিরে পেল ও সুস্থ হল, পরিস্কার ভাবে সব দেখতে লাগলো।
26পরে তিনি তাকে তার বাড়িতে পাঠিয়ে দিলেন এবং বললেন, এই গ্রামে আর ঢুকবে না।
27পরে যীশু ও তাঁর শিষ্যরা সেখানে গিয়ে কৈসরিয়া-ফিলিপী শহরে আসে পাশের গ্রামে গেলেন। আর পথে তিনি নিজের শিষ্যদের জিজ্ঞাসা করিলেন, "আমি কে, এ বিষয়ে লোকে কি বলে"?
28তাঁরা তাঁকে বললেন, অনেকে বলে, আপনি বাপ্তিস্মদাতা যোহন; আবার কেউ কেউ বলে, আপনি এলিয়; আবার কেউ কেউ বলে, আপনি ভাববাদীদের মধ্যে একজন।
29তিনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, কিন্তু তোমরা কি বল? আমি কে? পিতর উত্তর দিয়ে তাঁকে বললেন, আপনি সেই খ্রীষ্ট।
30তখন তিনি তাঁর কথা কাউকে বলতে তাঁদেরকে কঠিনভাবে বারণ করে দিলেন।
31পরে তিনি শিষ্যদেরকে এই বলে শিক্ষা দিতে শুরু করলেন যে, মানবপুত্রকে অনেক দুঃখ ভোগ করতে হবে। বৃদ্ধ নেতারা, প্রধান যাজকরা ও ধর্ম শিক্ষকেরা অগ্রাহ্য করবেন, তাকে মেরে ফেলা হবে, আর তিন দিন পরে আবার বেঁচে উঠবেন।
32এই কথা তিনি পরিস্কারভাবে বললেন। তাতে পিতর যীশুকে একপাশে নিয়ে গিয়ে বকাবকি করতে লাগলেন।
33কিন্তু তিনি মুখ ফিরিয়ে নিজের শিষ্যদের দিকে তাকিয়ে পিতরকে ধমক দিলেন এবং বললেন, আমার সামনে থেকে দূর হও শয়তান; কারণ যা ঈশ্বরের, তা নয়, কিন্তু যা মানুষের তাই তুমি ভাবছ।
34পরে তিনি নিজ শিষ্যদের সঙ্গে লোকদেরকেও ডেকে বললেন, কেউ যদি আমার সঙ্গে আসতে চায়, সে নিজের ইচ্ছা ভুলে যাক, নিজের ক্রুশ তুলে নিক এবং আমার সঙ্গে সঙ্গে আসুক।
35কারণ যে কেউ নিজের প্রাণ রক্ষা করতে চায়, সে তা হারাবে; কিন্তু যে কেউ আমার এবং সুসমাচারের জন্য নিজে প্রাণ হারায়, সে তা রক্ষা করবে।
36মানুষ যদি সমস্ত জগৎ জয় করে নিজ প্রাণ হারায়, তবে তার কি লাভ হবে?
37কিংবা মানুষ নিজের প্রাণের বদলে কি দিতে পারে?
38কারণ যে কেউ এই কালের ব্যভিচারী ও পাপী লোকদের মধ্যে আমাকে ও আমার বাক্যকে লজ্জার বিষয় জ্ঞান করে, মানবপুত্র তাকে লজ্জার বিষয় জ্ঞান করবেন, যখন তিনি পবিত্র দূতগণের সঙ্গে নিজের পিতার মহিমায় আসবেন।