1যীশু আবার গল্পের মাধ্যমে কথা বললেন, তিনি তাদের বললেন,
2স্বর্গ-রাজ্য এমন একজন রাজার মতো, যিনি তাঁর ছেলের বিয়ের ভোজ আয়োজন করলেন।
3সেই ভোজে নিমন্ত্রিত লোকদের ডাকার জন্য তিনি তাঁর দাসদের পাঠালেন, কিন্তু লোকেরা আসতে চাইল না।
4তাতে তিনি আবার অন্য দাসদের পাঠালেন, বললেন, "নিমন্ত্রিত লোকদেরকে বল, দেখ, আমার ভোজ প্রস্তুত করেছি, আমার অনেক বলদ ও হৃষ্টপুষ্ট পশু সব মারা হয়েছে, সবকিছুই প্রস্তুত, তোমরা বিয়ের ভোজে এসো।"
5কিন্তু তারা অবহেলা করে কেউ তার ক্ষেতে, কেউ বা তার নিজের কাজে চলে গেল।
6অবশিষ্ট সবাই তাঁর দাসদের ধরে অপমান করল ও বধ করল।
7তাতে রাজা প্রচন্ড রেগে গেলেন এবং সৈন্যসামন্ত পাঠিয়ে সেই হত্যাকারীদের ধ্বংস করলেন ও তাদের শহর পুড়িয়ে দিলেন।
8পরে তিনি তাঁর দাসদের বললেন, "বিয়ের ভোজ তো প্রস্তুত, কিন্তু ঐ নিমন্ত্রিত লোকেরা এর যোগ্য ছিল না,
9অতএব তোমরা রাজপথের মাথায় মাথায় গিয়ে যত লোকের দেখা পাও, সবাইকে বিয়ের ভোজে ডেকে আন।"
10তাতে ঐ দাসেরা রাজপথে গিয়া ভাল মন্দ যত লোকের দেখা পেল, সবাইকেই সংগ্রহ করে আনল, তাতে বিয়ে বাড়ি অতিথিতে পরিপূর্ণ হল।
11পরে রাজা অতিথিদের দেখার জন্যে ভিতরে এসে এমন এক ব্যক্তিকে দেখতে পেলেন, যার গায়ে বিয়ে বাড়ির পোশাক ছিল না,
12তিনি তাকে বললেন, "হে বন্ধু, তুমি কেমন করে বিয়ে বাড়ির পোশাক ছাড়া এখানে প্রবেশ করলে ?" সে উত্তর দিতে পারল না।
13তখন রাজা তাঁর দাসদের বললেন, "ওর হাত পা বেঁধে ওকে বাইরে অন্ধকারে ফেলে দাও , সেখানে লোকেরা কাঁদবে ও দাঁতে দাঁত ঘষবে।
14যদিও অনেককেই ডাকা হয়েছে, কিন্তু অল্পই মনোনীত।"
15তখন ফরীশীরা গিয়ে পরিকল্পনা করল, কিভাবে তাঁকে কথার ফাঁদে ফেলা যায়।
16আর তারা হেরোদীয়দের সঙ্গে তাদের শিষ্যদেরকে দিয়ে তাঁকে বলে পাঠাল, "গুরু, আমরা জানি, আপনি সত্যবাদী এবং সঠিক ভাবে ঈশ্বরের পথের বিষয় শিক্ষা দিচ্ছেন এবং আপনি কাউকে ভয় পাননা, কারণ আপনি লোকরা কে কি বলল সে কথায় কান দেবেন না ।
17ভাল, আমাদের বলুন, আপনার মত কি ? কৈসরকে কর দাও য়া উচিত কিনা ?"
18কিন্তু যীশু তাদের ফাঁদ বুঝতে পেরে বললেন, "ভন্ডরা, আমার পরীক্ষা কেন করছ ?
19সেই করের পয়সা আমাকে দেখাও।" তখন তারা তাঁর কাছে একটি দিনার আনল।
20তিনি তাদের বললেন, "এই মূর্ত্তি ও এই নাম কার ?" তারা বলল, "কৈসরের।"
21তখন তিনি তাদের বললেন, "তবে কৈসরের যা কিছু, তা কৈসরকে দাও , আর ঈশ্বরের যা কিছু, তা ঈশ্বরকে দাও ।"
22এই কথা শুনে তারা আশ্চর্য্য হল এবং তাঁর কাছ থেকে চলে গেল।
23সেই দিন সদ্দুকীরা, যারা বলে মৃতরা জীবিত হয় না, তারা তাঁর কাছে এলো ।
24এবং তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, "গুরু, মোশি বলেছেন, কেউ যদি সন্তান ছাড়া মারা যায়, তবে তার ভাই তার স্ত্রীকে বিয়ে করে তার ভাইয়ের জন্য বংশ রক্ষা করবে।
25ভাল, আমাদের মধ্যে সাতটি ভাই ছিল, আর বড়ভাই বিয়ের পর মারা গেল এবং সন্তান না হওয়ায় তার ভাইয়ের জন্য নিজের স্ত্রীকে রেখে গেল।
26এইভাবেই দ্বিতীয় জন তৃতীয় জন করে সাত জনই তাকে বিয়ে করল।
27সবার শেষে সে স্ত্রীও মরে গেল।
28অতএব মৃত্যু থেকে জীবিত হওয়ার সময় ঐ সাত জনের মধ্যে সে কার স্ত্রী হবে ? সবাই তো তাকে বিয়ে করেছিল।"
29যীশু এর উত্তরে তাদের বললেন, "তোমরা ভুল বুঝছ, কারণ তোমরা না জান শাস্ত্র, না জান ঈশ্বরের ক্ষমতা,
30কেননা মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে লোকে বিয়ে করে না এবং তাদের বিয়ের জন্য দাও য়া ও হয় না , বরং স্বর্গে ঈশ্বরের দূতদের মতো থাকে।
31কিন্তু মৃতদের মৃত্যু থেকে জীবিত হওয়ার বিষয়ে ঈশ্বর তোমাদের যা বলেছেন, তা কি তোমরা শাস্ত্রে পড় নি ?"
32তিনি বলেন, "আমি অব্রাহামের ঈশ্বর, ইসহাকের ঈশ্বর, ও যাকোবের ঈশ্বর," ঈশ্বর মৃতদের নন, কিন্তু জীবিতদের।
33এই কথা শুনে লোকেরা তাঁর শিক্ষাতে অবাক হয়ে গেল ।
34ফরীশীরা যখন শুনতে পেল, তিনি সদ্দুকীদের নিরুত্তর করেছেন, তখন তারা একসঙ্গে এসে জুটল।
35আর তাদের মধ্যে এক ব্যক্তি, একজন শাস্ত্রীয় বিধানের গুরু, পরীক্ষা করার জন্য তাঁকে জিজ্ঞাসা করল,
36"গুরু, শাস্ত্রের বিধানের মধ্যে কোন আদেশটি মহান ?"
37তিনি তাকে বললেন, "তোমার সমস্ত হৃদয়, তোমার সমস্ত প্রাণ ও তোমার সমস্ত মন দিয়ে তোমার ঈশ্বর প্রভুকে ভালবাসবে,"
38এটা মহান ও প্রথম আদেশ।
39আর দ্বিতীয়টি এর সমান, "তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত ভালবাসবে।"
40এই দুটো আদেশেই সমস্ত ব্যবস্থা এবং ভাববাদীদের বই নির্ভর করে।
41আর ফরীশীরা একত্র হলে যীশু তাদের জিজ্ঞাসা করলেন,
42"খ্রীষ্টের বিষয়ে তোমাদের কি মনে হয়, তিনি কার সন্তান ?" তারা বলল, "দায়ূদের।"
43তিনি তাদের বললেন, "তবে দায়ূদ কি ভাবে আত্মার আবেশে তাঁকে প্রভু বলেন ?" তিনি বলেন,-
44"প্রভু আমার প্রভুকে বললেন, তুমি আমার ডান পাশে বস, যতক্ষণ না আমি তোমার শত্রুদেরকে তোমার পা রাখার জায়গায় পরিণত করি।"
45অতএব দায়ূদ যখন তাঁকে প্রভু বলেন, তখন তিনি কি ভাবে তাঁর সন্তান ?
46তখন কেউ তাঁকে কোন উত্তর দিতে পারল না, আর সেই দিন থেকে তাঁকে কোন কথা জিজ্ঞাসা করতে কারও সাহস হল না।